কক্সবাজারে উত্তাল সমুদ্রে গোসলে কয়েক হাজার পর্যটক
আবদুর রহিম কক্সবাজার, জেলা প্রতিনিধিঃ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপে প্রভাবে উত্তাল রয়েছে সাগর। এর মধ্যেই আজ বুধবার কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে কয়েক হাজার পর্যটককে গোসল করতে দেখা গেছে। দিনভর ঢেউগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে এক থেকে দেড় ফুট উঁচু হয়ে এসেছে। নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার পূর্বাভাস থাকলেও পর্যটকদের মধ্যে সতর্কতা লক্ষ করা যায়নি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বঙ্গোসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি গতকাল মঙ্গলবার নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি বুধবার রাতের ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তখন সতর্কসংকেত বাড়ানো হবে। এখন কক্সবাজার সমুদ্র-উপকূলে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখানো হচ্ছে।দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান এর প্রভাবে বঙ্গোসাগরের জোয়ারের উচ্চতা কিছুটা বেড়েছে জানিয়ে আবদুর রহমান বলেন, সংকেত বাড়লেও সমুদ্রের পানির উচ্চতা আরও বাড়তে পারে। নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে কক্সবাজার উপকূল দিয়ে মিয়ানমারে আঘাত হানতে পারে। সে ক্ষেত্রে কক্সবাজারে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
বেলা ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত সৈকতের সিগাল ও লাবণী পয়েন্ট এলাকা ঘুরে কয়েক হাজার পর্যটককে সমুদ্রে গোসল করতে দেখা গেছে। ঢাকার সাভারের ব্যবসায়ী নাজিউর রহমান (৪৫) দুপুর ১২টার দিকে দুই বন্ধুকে নিয়ে সৈকতে গোসলে নামেন। একপর্যায়ে দ্রুতগতির জলযান জেডস্কি নিয়ে গভীর সমুদ্রেও ঘুরে আসেন তিনি। চলমান গভীর নিম্নচাপটি যে রাতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, এটা নিয়ে উদ্বেগ কাজ করছে কি না, জানতে চাইলে নাজিউর রহমান বলেন, তেমন কিছুই তো দেখা যাচ্ছে না। ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ এলে আরও এক দিন থেকে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে।বুধবার দিনভর গরমে অতিষ্ঠ ছিলেন পর্যটকেরা। লাবণী পয়েন্টে উত্তর দিকে সিগাল, সুগন্ধা ও কলাতলী সৈকতে আসা ৮০ শতাংশ পর্যটক সমুদ্রে গোসলে নামেন। বাকিরা বালুচরের বসানো চেয়ার-ছাতার কিটকটে বসে ও সৈকতে হেঁটে সময় পার করেন।
জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত সৈকতে গোসলে নেমেছেন ২০ হাজারের বেশি পর্যটক। নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর কিছুটা উত্তাল হলেও ১ নম্বর সতর্কসংকেত থাকায় বালুচরে লাল নিশান ওড়ানো হচ্ছে না। বুধবার রাতে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, তখন সংকেতও বাড়বে। ওই সময় সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে লাল নিশান তুলে পর্যটকদের সমুদ্রে গোসলে নামতে নিষেধ করা হবে। কক্সবাজারে ১৯-২০ দিন ধরে টানা গরমের কারণে পর্যটকের সমাগম কমেছে জানিয়ে কক্সবাজার হোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত পড়লে পর্যটকের সংখ্যা আরও কমতে পারে। পর্যটক টানতে এখন কক্ষভাড়ায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ © নলডাঙ্গা বার্তা