1. admin@naldangabatra.com : admin :
বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
গলাচিপা উপজেলা সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার সাংবাদিক শ্রী মিশুক চন্দ্র ভুঁইয়া। দুর্গাপুরে সংবাদ সংগ্রহকালে অর্তকিত হামলার শিকার কালবেলা প্রতিনিধি,-রাজু আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে পিরোজপুরে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচীর আওতায় ৫৬ হাজার ৭৩৭ জন কিশেরীকে টিকা প্রদান করা হবে। নওগাঁর কাঁচা মরিচ কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে পার্থক্য ৬০ টাকা। অবৈধ স্থাপনার তৈরির হিড়িক ওয়াবেঁকী তোহা বাজারের জায়গায়।  পলাশবাড়ীতে শ্রমিক ইউনিয়নের নবগঠিত কমিটির প্রথম সভা। হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে নাইন মার্ডার মামলায় সাংবাদিকসহ ৩ আসামি গ্রেফতারে সমালোচনার ঝড়।চেয়ারম্যান আহাদকে আনা হবে রিমান্ডে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে, রাজশাহীতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। নবীনগরে মৎস্য কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে নবীনগরে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের অপসারণ না করার দাবীতে মানববন্ধন।

গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ‘ঢেঁকি’ এখন শুধুই স্মৃতি

নলডাঙ্গা বার্তা ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪
ও বউ ধান ভানে রে, ঢেঁকিতে পার দিয়া…।’ ঢেঁকির পাড়ে পল্লিবধূদের এমন গান এক সময় গ্রাম-বাংলার গ্রামীণ জনপদে সবার মুখে মুখে থাকত। ধান থেকে চাল, তা থেকে আটা। একসময়ে উত্তর জনপদের শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাই চাল আর আটা প্রস্তুতের একমাত্র মাধ্যম ছিল ঢেঁকি। নবান্ন এলেই ঢেঁকির পাড়ে ধুম পড়ত নতুন ধানের চাল ও আটা তৈরির। আর শীতের পিঠা তৈরি আয়োজন চলত উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে।
২৭৫ বার পঠিত
গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ‘ঢেঁকি’ এখন শুধুই স্মৃতি
গোলাম রাব্বানী, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
‘ও বউ ধান ভানে রে, ঢেঁকিতে পার দিয়া…।’ ঢেঁকির পাড়ে পল্লিবধূদের এমন গান এক সময় গ্রাম-বাংলার গ্রামীণ জনপদে সবার মুখে মুখে থাকত। ধান থেকে চাল, তা থেকে আটা। একসময়ে উত্তর জনপদের শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাই চাল আর আটা প্রস্তুতের একমাত্র মাধ্যম ছিল ঢেঁকি। নবান্ন এলেই ঢেঁকির পাড়ে ধুম পড়ত নতুন ধানের চাল ও আটা তৈরির। আর শীতের পিঠা তৈরি আয়োজন চলত উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে।
তবে কালের বিবর্তনে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে ঢেঁকি। আর বর্তমানে নতুন প্রজন্মের কাছে ‘ঢেঁকি’ শব্দটি শুধু অতীতের গল্প মাত্র। বাস্তবে এর দেখা মেলা ভার। উপজেলার দুএক জায়গায় থাকলেও ব্যবহার তেমন একটা নেই। আশির দশক থেকে ক্রমে বিলুপ্তির পথে ঢেঁকি। উপজেলার প্রবীণ লোকজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক সময় ঢেঁকিতে তৈরি করা আটা দিয়ে গ্রামের ঘরে ঘরে প্রস্তুত করা হতো পুলি, ভাপা, পাটিসাপটা, তেলে ভাজা, চিতইসহ নানা ধরনের বাহারি পিঠা-পুলি। পিঠার গন্ধ ছড়িয়ে পড়ত এক পাড়া থেকে অন্য পাড়ায়। উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্যাপন করা হতো নবান্ন উৎসব। গ্রামীণ জনপদগুলোতে এখন বিরাজ করছে শহুরে আবেশ। তাই গ্রামে গ্রামে আর ঢেঁকি নেই, নেই পল্লিবধূদের মনমাতানো গান। কিছু জায়গায় নবান্ন উৎসব হলেও পিঠা-পুলির সমাহার আর চোখে পড়ে না। গ্রামবাংলার এমন চিরায়ত সব ঐতিহ্য এখন শুধুই স্মৃতি।
ঢেঁকিছাঁটা চাল শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী হওয়ায় তা দিয়ে গ্রামের শিশুদের জাউ তৈরি করে খায়ানো হতো। কিন্তু কাল চক্রের বিবর্তন ও যান্ত্রিক সভ্যতার আগ্রাসনে হারিয়ে যাচ্ছে ধান থেকে চাল-আটা তৈরির একমাত্র মাধ্যম গ্রামীণ ঢেঁকি।
সভ্যতার প্রয়োজনে ঢেঁকির আবির্ভাব ঘটেছিল। আবার গতিময় সভ্যতার যাত্রায় প্রযুক্তিগত উৎকর্ষে ঢেঁকি বিলুপ্তি হচ্ছে। একে না মেনে নিয়ে উপায় নেই। আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরেও তেমন একটি ঢেঁকিরও দেখা মেলে না। আধুনিক যুগে সেই ঢেঁকির জায়গা দখল করে নিয়েছে বিদ্যুৎ–চালিত মেশিন। গ্রামগঞ্জে গড়ে উঠেছে মিনি রাইস মিল। ফলে ঢেঁকির অস্তিত্ব আজ বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। ঢেঁকিছাঁটা চাল আজ আর নেই। এখন আর আগের মতো ঢেঁকিতে ধান ভানার দৃশ্যও চোখে পড়ে না। ভোরের স্তব্ধতা ভেঙে শোনা যায় না ঢেঁকির ‘ঢেঁকুর’ ‘ঢেঁকুর’ শব্দ। চোখে পড়ে না বিয়েশাদির উৎসবে ঢেঁকিছাঁটা চালের ক্ষীর–পায়েস রান্না। অথচ একদিন ঢেঁকি ছাড়া গ্রাম কল্পনা করা কঠিন ছিল।
ও বউ ধান ভানে রে, ঢেঁকিতে পার দিয়া…।’ ঢেঁকির পাড়ে পল্লিবধূদের এমন গান এক সময় গ্রাম-বাংলার গ্রামীণ জনপদে সবার মুখে মুখে থাকত। ধান থেকে চাল, তা থেকে আটা। একসময়ে উত্তর জনপদের শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাই চাল আর আটা প্রস্তুতের একমাত্র মাধ্যম ছিল ঢেঁকি। নবান্ন এলেই ঢেঁকির পাড়ে ধুম পড়ত নতুন ধানের চাল ও আটা তৈরির। আর শীতের পিঠা তৈরি আয়োজন চলত উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে।
একসময় গ্রামের প্রায় সব সম্ভ্রান্ত পরিবারেই ঢেঁকি ছিল। ধান ভাঙা কল আমদানির পর গ্রমাঞ্চল থেকে ঢেঁকি বিলীন হওয়া শুরু হয়। ফলে গ্রামের মানুষ ভুলে গেছেন ঢেঁকিছাঁটা চালের স্বাদ। যান্ত্রিক সভ্যতা গ্রাস করেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী কাঠের ঢেঁকিশিল্পকে। বর্তমান যুগের অনেকেই ঢেঁকি চেনে না। কালের পাতায় স্মৃতি হয়ে যাচ্ছে ঢেঁকি। যেখানে বসতি সেখানেই ঢেঁকি, কিন্তু আজ তা আমাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য থেকে মুছে যাচ্ছে। হাতের কাছে বিভিন্ন যন্ত্র আর প্রযুক্তি সহজলভ্য হওয়ায় ঢেঁকির মতো ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছুই এখন হারিয়ে যাচ্ছে।
ঢেঁকি বড় কাঠের গুঁড়ি দিয়ে তৈরি। লম্বায় অন্তত ছয় ফুটের মতো। এর অগ্রভাগের মাথার কাছাকাছি দেড় ফুট লম্বা মনাই। মনাইয়ের মাথায় পরানো লোহার রিং (আঞ্চলিক ভাষায় চুরনও বলা হয়)। চুরন বারবার যেখানে আঘাত করে নিচের সেই অংশটুকুর নাম গর। সেটিও কাঠের তৈরি। ঢেঁকিতে ধান বা চাল মাড়াই করতে কমপক্ষে তিনজন মানুষের প্রয়োজন হয়। পেছনের লেজবিশিষ্ট চেপ্টা অংশে এক বা দুজন পা দিয়ে তালে তালে চাপ দিলে মনাই সজোরে গরের ভেতর ধান বা চালের ওপর আঘাত করে। তবে মনাই ওঠানামার ছান্দিক তালে তালে আরও একজন নারী ধান–চাল মাড়াই করতে সাহায্য করে। তবে ঢেঁকিতে পাড় দেওয়া আর আলি দেওয়ার মধ্যে সঠিক সমন্বয় না থাকলে ঘটতে পারে ছন্দপতন। বর্তমান সময়ে কিছু কিছু বাড়িতে ঢেঁকি থাকলেও তা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য ব্যবহার করা হয়। আগের তা হতো না। এখন প্রতি কেজি চাল থেকে আটা প্রস্তুত করতে নেওয়া হয় ১০ থেকে–১২ টাকা। ঢেঁকির মালিক নিজের লোকবল দিয়েই ওই আটা প্রস্তুত করেন। আধুনিক মেশিনে প্রস্তুত করা আটার তৈরি পিঠায় স্বাদ না থাকায় কিছু মানুষ টাকা দিয়েই ঢেঁকিতে আটা তৈরি করতে আসে।
Facebook Comments Box

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ ©  নলডাঙ্গা বার্তা

 
প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park