নাটোরে ঋণের চাপে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে যুবকের আত্মহত্যা।
আল আমিন, নাটোর প্রতিনিধিঃ
নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়ায় মোস্তাক হোসেন নামে এক যুবক ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ‘গ্যাস ট্যাবলেট’ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল রবিবার দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের পূর্ব হাগুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মোস্তাক নাটোর জজ কোর্টের স্ট্যাম্প ভেন্ডার ছিলেন। প্রতিবেশীদের ধারণা, অনলাইনে জুয়া খেলে এমন ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েন মোস্তাক।
নিহতের পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানান, মোস্তাকের বাড়ি সদর উপজেলার উলিপুর এলাকায়। তবে তিনি পূর্ব হাগুরিয়া এলাকায় জমি কিনে বাড়ি করে থাকতেন। পরে ধীরে ধীরে ঋণে জড়াতে থাকেন মোস্তাক। এক পর্যায়ে ঋণের পরিমাণ বেড়ে ১৮-২০ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। ঋণ দাতাদের চাপে গত ১০-১২ দিন আগে মোস্তাক আত্মগোপনে চলে যান। পরে ঋণদাতাদের চাপে মোস্তাকের স্ত্রী বাড়ি বিক্রির সাইনবোর্ড দেন। এরপর মেস্তাক ফিরে এলে ঋণদাতাদের চাপ আরও বাড়ে। এক পর্যায়ে তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে দুইদিন অনাহারে দিন কাটান। পরে রবিবার সকালে স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে চা পানের কথা বলে ৩৫ টাকা ধার নিয়ে গ্যাস ট্যাবলেট কিনে খান মোস্তাক। পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা প্রথমে তাকে নাটের সদর হাসপাতাল নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মোস্তাক।
নাটোর জজকোর্টের সহকারী কৌশুলী সারোয়ার জাহান সোহেল বলেন, ‘কোর্টেও অনেকের কাছে ঋণ করেছে মোস্তাক। ঋণ পরিশোধে বাড়ি বিক্রির কথাও তাকে বলেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ তার মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা পড়েছে চরম বেকায়দায়। মোস্তাকের বড় মেয়ে গত বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। মেঝো মেয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ছেলের বয়স ৩-৪ বছর। স্ত্রী গৃহিণী। এই অবস্থায় তাদের সংসার চলবে কিভাবে। ঋণই বা পরিশোধ হবে কিভাবে?’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী বলেন, ‘মোস্তাক ভালোই আয় করতেন। তার পরিবারের সদস্যদের পোশাক, চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়ায় অতি বিলাসীতার ছাপ দেখা যেতো। তবে মোস্তাক যাদের সঙ্গে চলাফেরা করতেন তাদের অনেকেই মোবাইলে জুয়া খেলে বাড়ি-ঘর বিক্রি করে এখন নি:স্ব।মোস্তাকের ক্ষেত্রেও মনে হয় এমনটাই ঘটেছে।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ © নলডাঙ্গা বার্তা