নাটোরে মদ্যপ অবস্থায় ইউপি সদস্যের মারধরে ৪ নারীসহ আহত-৭-অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আটক
আল আমিন, নাটোর প্রতিনিধিঃ
নাটারের বড়াইগ্রামে আবুল কালাম খান ওরফে কালাম মাতাল (৪৫) নামের ইউনিয়ন পরিষদের এক মেম্বারের বিরুদ্ধে মদ্যপ অবস্থায় ৪ নারীসহ ৭জনকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের ভুইয়াপাড়া খ্রিস্টান পল্লীতে এই ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আটক করে। আটক আবুল কালাম উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ড সদস্য ও গোপালপুর মধ্যপাড়ার মৃত আজাহার খাঁ’র ছেলে। এ ব্যাপারে হামলার শিকার আদিবাসী খ্রিস্টান নারী প্রিসিলা মালা বাদী হয়ে রাতেই বড়াইগ্রাম থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ভুইয়াপাড়া খ্রিস্টান পল্লীর বাসিন্দা দিপালী রাজারিও জানান, রবিবার সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে আবুল কালাম মদ পান করে খ্রিস্টান পল্লীর রাস্তায় এক ভ্যানচালককে আটকিয়ে টাকা চায়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আবুল কালাম ওই ভ্যানচালকের হাতোর আঙ্গুল কামড়ে ধরে ও মারপিট করে। ওই ভ্যানচালককে বাঁচাতে এগিয়ে এলে আবু তাহের (৫০) ও তার ছেলে শাওন প্রামাণিক (২৪)কে মারধর করে আহত করে ইউপি সদস্য আবুল কালাম।
মামলার বাদী প্রিসিলা মালা জানান, ঘটনার সময় কালাম মাতাল হাতে বাটাম নিয়ে অনেক জনকেই তাড়া করে। এক পর্যায়ে গাছের সাথে ও দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেয়ে সে নিজই রক্তাক্ত জখম হয়। তারপরও সে বাড়ির ভিতর ঢুকে আমাকে মারধর করে ও শ্লীলতাহানী করে। আমাকে উদ্ধার করতে এসে তার বাটামের আঘাতে রুপালী বাগলী’র (৪০) ডান হাতের হাড় ভেঙ্গে গেছে।এদিকে তার হামলায় আহত হয়েছেন একই এলাকার রায়মন রাজারিও (৬০), আলেকজান্ডার মানিক (২৮) ও দিপালী রাজারিও (৪৫)।আহত সকলই স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্থানীয় সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য সালমা খাতুন কমলা জানান, কালাম মেম্বারকে স্থানীয়রা কালাম মাতাল নামেই চেনে। মদ্যপ অবস্থায় খ্রিস্টান পল্লীতে এসে মারধর করায় একটা ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে মহিলা ও শিশুরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে ঘরের দরজা আটকিয়ে দেয়।অভিযুক্ত কালাম মাতাল মাঝে-মধ্যেই অতিরিক্ত মদ পান করে এই খ্রিস্টান পল্লীতে এসে অপ্রীতিকর আচরণ করে। তার ভয়ে খ্রিস্টান পল্লীর কেউ কোন প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযাদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ইউপি সদস্য কালামকে সকলেই কালাম মাতাল নামেই ডাকে ও চিনে। তার এ ধরণের মাতলামী নতুন কিছু নয়। খ্রিস্টান পাড়াতে এ ধরণের ঘটনা আরও বেশ কয়েকবার ঘটিয়েছে। তার সংশোধন হওয়া জরুরী।অভিযুক্ত ইউপি সদস্য কালামের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে (কালামকে) মেরে আহত করেছে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ শফিউল আযম খান জানান, উভয় পক্ষ থেকেই অভিযোগ পেয়েছি। রাতেই কালাম মেম্বার সহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। কালাম মেম্বারকে পুলিশ হেফাজতে রেখে বড়াইগ্রাম উপজলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। সুস্থ হলে পরবর্তী আইনী প্রক্রিয়া গ্রহন করা হবে।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ © নলডাঙ্গা বার্তা