1. admin@naldangabatra.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নাটোরের লালপুরে ভুয়া চক্ষু ডাক্তার আটক ও এক মাসের কারাদন্ড। নাটোরের লালপুরে বিএনপি’র দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন। যে নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারপার্সন অংশগ্রহণ করতে পারবে দেশে সেই নির্বাচনী হবে রাজশাহীর দুর্গাপুর পালশা গ্রামে রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত অবস্তায় অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার। ছাত্র জনতার উপর নির্বিচারে গণহত্যার প্রতিবাদে পাবনায় গণ অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত ডেপুটি স্পিকার পাবনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু গ্রেফতার পাবনায় বিস্কুট কিনতে গিয়ে অটোভ্যানের চাপায় প্রাণ গেল শিশুর। লালপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাঝে খাবার ও পানি বিতরণ। কোটালিপাড়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ।  স্বাভাবিক হতে শুরু করছে নীলফামারীর ৬ থানার কার্যকম

“প্রিয় শিক্ষকের বদলী : চোখের জলে বিদায় দিলো শিক্ষার্থীরা”

নলডাঙ্গা বার্তা ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৮নং পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক উদ্দীপন সরকারকে চোখের জলে বিদায় দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এতটাই প্রিয় শিক্ষক ছিলেন যে প্রিয় শিক্ষার্থীদের চোখের জলে নিজেকে আর ধরতে রাখতে না পেরে কেঁদেছেন অঝোর ধারায়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এমন ভালবাসার কান্নার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এমন ভালবাসায় ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন অনেকে।
১১৬ বার পঠিত

“প্রিয় শিক্ষকের বদলী : চোখের জলে বিদায় দিলো শিক্ষার্থীরা”

গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৮নং পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক উদ্দীপন সরকারকে চোখের জলে বিদায় দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এতটাই প্রিয় শিক্ষক ছিলেন যে প্রিয় শিক্ষার্থীদের চোখের জলে নিজেকে আর ধরতে রাখতে না পেরে কেঁদেছেন অঝোর ধারায়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এমন ভালবাসার কান্নার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এমন ভালবাসায় ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন অনেকে।

জানাগেছে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৮নং পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন উদ্দীপন সরকার। প্রায় দুই বছরে শিক্ষার্থীদের প্রিয় শিক্ষকে পরিনত হয়ে ওঠেন তিনি। শিক্ষার্থীদের শিক্ষার্থী না ভেবে সন্তানের মত পড়ালেখা করিয়েছেন তিনি। শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিয়েছেন প্রতিনিয়ত। ফলে শিক্ষক আর শিক্ষার্থীদের মধ্যে গড়ে ওঠে আত্মার আর ভালবাসার সম্পর্ক। কিন্তু বিদলিজনিত কারণে ৮নং পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছেড়ে যোগ দিতে হচ্ছে মুকসুদপুর উপজেলার গোহালা ইউনিয়নের ১৮৬নং আচারপাড়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। জন্মগতভাবে এক পায়ে সমস্যা থাকলেও পথ চলায় আটকাতে পারিনে কখনো, পিছনে ফিরেও তাকাতে হয়নি কখনো। নিজের মেধা, গুণ ও ভালবাসা দিয়ে জয় করে নিয়েছেন শিক্ষার্থীদের ভালবাসা।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৮নং পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক উদ্দীপন সরকারকে চোখের জলে বিদায় দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এতটাই প্রিয় শিক্ষক ছিলেন যে প্রিয় শিক্ষার্থীদের চোখের জলে নিজেকে আর ধরতে রাখতে না পেরে কেঁদেছেন অঝোর ধারায়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এমন ভালবাসার কান্নার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এমন ভালবাসায় ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন অনেকে।

 

 

মঙ্গলবার দুপুরে প্রিয় শিক্ষক উদ্দীপন সরকার বিদায় নিতে স্কুলে গেলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রিয় শিক্ষককে যেতে মানা করে। শিক্ষার্থীদের কান্না দেখে নিজেও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এসময় ভারী হয়ে ওঠে বিদ্যালয়ের পরিবেশ। বিদায় বেলা প্রিয় শিক্ষককের হাতে চিঠি তুলে দেয় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষক উদ্দীপন সরকার তার ফেসকুব আইডিতে (Uddipan Sarkar) কয়েকটি ভিডিও দিয়ে লিখেন, বিদায় ০৮নং পাঁচুড়িয়া সঃপ্রাঃবি। স্বাগতম ১৮৬নং আচারপাড়া আদর্শ সঃপ্রাঃবি। ছাত্রছাত্রীদের কি দিতে পেরেছি, কতটুকু দিতে পেরেছি জানি না তবে সাগরের মত গহিন, আকাশের মত অসীম আর পর্বতসম ভালবাসা আর শ্রদ্ধা পেয়েছি। এ ভালবাসা চিরন্তন, সার্বজনীন, এ ভালবাসা প্রান ছোয়ার। ছাত্রছাত্রীরা গগনভেদী স্নিগ্ধ, আর অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বার বার বলেছে স্যার যেয়ো না, যেয়ো না। আপনার মত এত ভাল স্যার আর পাব না, আপনার মত কেউ আসবে না। আপনি যে স্কুলে যাচ্ছেন আমরা সেই স্কুলে পড়ালেখা করব, আমাদের নিয়ে যান আপনার সাথে। এমন কথা শুনে আমি নির্বাক, স্তব্ধ ও অশ্রুসিক্ত। আমার আঁখিযুগলে অবাধে বারি ঝরে।

তিনি আরো লিখেছেন, শিশুদের এই অব্যক্ত কান্নায় কেঁদেছে প্রকৃতি, কেঁদেছে আকাশবাতাস, কেঁদেছে বিদ্যালয়ের বৃক্ষরাজি, অশ্রু ঝরেছে বিদ্যালয় ভবনের প্রতিটি ইটেরও। সর্বোপরি, সকলকে দোয়া/আর্শীবাদ করি তোমরা পড়ালেখা করে মানুষের মত মানুষ হও, বাবা মায়ের মুখ উজ্জ্বল কর, দেশকে উন্নতির উচ্চ শিখরে আরোহন কর। শিক্ষক উদ্দীপন সরকারের ফেসবুক আইডিতে দেয়া এই স্ট্যাটাসে উৎপল ভক্ত লিখেন, এটাই তো শিক্ষকের স্বার্থকতা। লিপটন সরকার লিখেন, শিক্ষার্থীদের আবেগ আর ভালোবাসা প্রমান করে শিক্ষকতাই মহান পেশা। বন্ধু তুমি জয় করে নিয়েছো প্রতিটি শিক্ষার্থীর অফুরন্ত ভালোবাসা যেটা কখনো ভোলার নয়। শিক্ষার্থীদের অশ্রুপাত দেখে মনে হচ্ছে বদলি না হলেই ভালো হতো কিন্ত এতো দূরে তোমার স্কুল বদলি হওয়াটা আবশ্যিক ছিলো। তোমার শিক্ষকতায় আরো মহান হও ভগবানের কাছে এই প্রার্থনা রাখছি। ৮নং পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সিয়াম শেখ জানায়, স্যার আমাদের পড়ালেখার দিকে সব সময় খেয়াল রাখতেন। আমাদের মারধর করাতো দূরের কথা কখনো ধমকও দেননি। মনেই হয়নি তিনি আমাদের শিক্ষক। আমরা আর এমন স্যার পাবো না। ৫ম শ্রেনীর অপর শিক্ষার্থী অনিশা ও নূসরাত জানায়, স্কুলে আসলে মনে হয়নি তিনি আমাদের শিক্ষক। সব সময় বন্ধুর মত করে পড়ালেখা করিয়েছেন। আমরা আমাদের শিক্ষাজীবনে এমন শিক্ষক আর পাবো না। আমরা উদ্দীপন স্যারকে আবার ফিতে পেতে চাই।

৮নং পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন সুলতানা বলেন, দুদিনের এই ক্ষনস্থায়ী পৃথিবীতে আমাদের সকলকেই বিদায় নিতে হবে। তবে এই পার্থিব জগতে কিছু বিদায় আছে স্থানান্তর মাত্র। এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় চলে যাওয়া। তেমনি কর্মস্থল ত্যাগ করে বদলিজনিত বিদায় নিলেন আমার সহকর্মী উদ্দিপন সরকার। নামের সাথে কর্মের ভীষন মিল, প্রত্যেকটা কাজে খুব ইচ্ছাশক্তি নিয়ে কাজ করে যেতেন দিবা নিশি। অক্লান্ত পরিশ্রম করতে দেখেছি আর খুব অবাক হয়েছি। শিশু মনে খুব দাগকেটে চলে গেলেন। বিদায় বেলায় কান্নায় কাউকে থামাতে পারি নাই। নিজের চোখের জলকে ধরে রাখতে পারি নাই। এত অল্প সময়ে একজন শিক্ষক শিশুদের মনি কোঠায় এমনভাবে জায়গা করে নিতে পারে, তার দৃস্টান্ত একমাত্র তাকেই দেখেছি। একজন নি:স্বার্থ, পরপকারী শিশুবান্ধব সহকর্মীকে হারিয়ে অপুরনীয় ক্ষতি হয়ে গেল। বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটা শিক্ষার্থী যেভাবে কান্নায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে, এই শোক কাটিয়ে উঠতে কতদিন সময় লাগবে জানি না।

Facebook Comments Box

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ ©  নলডাঙ্গা বার্তা

 
প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park