১৫৬ বার পঠিত
পাবনার ঈশ্বরদীতে ২০২২ সালে মামলার সংখ্যা ৫১৩’ আসামি গ্রেপ্তার ৫৪৭ জন, রেকর্ড পরিমাণ মাদক জব্দ
পাবনা প্রতিনিধি :
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গত এক বছরে মামলার সংখ্যা ৫১৩, আসামি গ্রেপ্তার ৫৪৭ জন, রেকর্ড পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে।
এ ছাড়া ভ্রাম্যমান আদালতে মাদকের মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে আরও অনেককে। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে জব্দকৃত মাদকদ্রব্যের মধ্যে রয়েছে হেরোইন ৮২৬ গ্রাম, ইয়াবা ট্যাবলেট ১০ হাজার ৩২৩ পিস, ফেন্সিডিল ৯০০ বোতল, গাজা ৬৯ কেজি, গাজার গাছ ৪৮টি, চোলাই মদ ৬২৮ লিটার, বিয়ার ১৭ বোতল ও টাপেনডল ট্যাবলেট ৩৩ পিস। ঈশ্বরদী থানা সুত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, বিগত কয়েক বছর ধরে ঈশ্বরদীতে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার ও মাদক সেবনকারীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিরোধের জন্য মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান জোরদার করা হয়। এতে অনেকে ধরা পড়লেও মাদক বিস্তার কমে নাই।
এজন্য সামাজিক প্রতিরোধ না থাকাকে দায়ি করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু পুলিশের প্রচেষ্টায় মাদক বিস্তাররোধ সম্ভব নয়, দরকার সীমান্তে কড়া নজরদারি এবং অভিভাবকসহ সচেতন মানুষের মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া।
ঈশ্বরদী থানা সুত্রে জানা যায়, মাদকদ্রব্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে ইয়াবা ও ফেন্সিডিলের। বাকী মামলাগুলো হেরোইন, চোলাইমদ ও গাঁজার। তবে এসব মামলায় রাঘববোয়ালরা রয়েছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। জেলার অন্যান্য উপজেলার মধ্যে বিদায়ী ২০২২ সালে ঈশ্বরদী থানায় মাদকের মামলা হয় ৫১৩। আসামীর সংখ্যা ৫৪৭ জন। মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদনও আদালতে দাখিল করা হয়।
স্থানীয় সুত্র বলছে, ঈশ্বরদী ভারতীয় সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় এবং ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার সঙ্গে সড়ক, ট্রেন ও নদীপথের যোগাযোগ সহজ হওয়ায় ঈশ্বরদীতে মাদক সহজেই প্রবেশ করতে পারে।
মাদক ও চোরাচালানে অল্প সময়ে বেশি অর্থ আয়ের আশায় অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে এখানকার তরুণ-যুবকসহ সাধারণ মানুষ। তাঁরা নানা কৌশলে পুলিশ প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে হিমসিম খাচ্ছে পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থার অভিযানে মাদকসহ কারবারীরা গ্রেপ্তার হলেও মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণকারী গডফাদাররা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকায় মাদক বিস্তার রোধ হচ্ছে না। পক্ষান্তরে মাদক ব্যবসায়ীরা ধরা পড়লেও জেল থেকে বের হয়ে আবার একই কারবারে জড়িয়ে পড়ে। ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, ঈশ্বরদীতে মাদক ব্যবসা জিরো টলারেন্সে নিয়ে আসার জন্য পুলিশ প্রশাসন কাজ করছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযান ছাড়াও বিভিন্ন সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশি তল্লাশি কেন্দ্র বসিয়ে মোটরসাইকেলসহ যানবাহনে তল্লাশি চালানো হয়।
তিনি বলেন, পুলিশের একার পক্ষে মাদক নির্মুল সম্ভব নয়। সামাজিক প্রতিরোধ না থাকায় মাদকের বিস্তার ঠেকানো যাচ্ছে না। মাদক নিয়ন্ত্রণে অভিভাবক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সমাজ সচেতন নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে।