অবিরাম ছুটে চলা হরেক মাল ব্যবসায়ী ইসমাইল।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইসমাইর বয়স আনুমানিক (৪২) তার গোটা সাইকেল জুড়ে শোভা পাচ্ছে হরেক রকমের মাল। ওইসব মালের মধ্যে রয়েছে কানের দুল, চেইন, ব্যান, চুড়ি, ক্লিপ, চিরুনি, ফিতা, নিলপলিশ, মানি ব্যাগ, ছোট বালতি, মগ, বাটি, ছাকনিসহ নানা রকমের পণ্য সামগ্রী।
প্লাস্টিক পলিথিনের মধ্যে ওই সব পণ্য সেপটিপিন দিয়ে আটকিয়ে সকাল থেকে সাইকেলে নিয়ে ছুটে চলেছেন এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে। তার মুখে বলছেন রাখবেন হরেক মাল, রাখবেন হরেক মাল। মা বোনদের কার লাগবে চলে আসুন। এমন দৃশ্য দেখা গেছে ইসলামপুর উপজেলার পলবান্ধা ইউনিয়নের সিরাজাবাদ ও বাহাদুরপুর গ্রামে।
এই হরেক মাল বিক্রেতার বাড়ী রাজশাহী জেলার তানর উপজেলার কামার গা ইউনিয়নের বিহাররোয়েল এলাকায়। তিনি প্রায় ১৭ বছর ধরে এ পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। পরিবারে তার স্ত্রী ও ১ মেয়ে রয়েছে। এ পেশায় চলছে তার জীবিকা।
বর্তমানে তিনি ইসলামপুর পৌর শহরের রেল ষ্ট্রেশন এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকছেন। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে হরেক রকমের মাল সাইকেলে সাজিয়ে নিয়ে ইসলামপুর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন। দিন শেষে ১৫শ থেকে ১৬শ টাকা মাল বিক্রি করেন ।হরেক রকমের মালামাল স্বল্প দাম হওয়ায় এলাকার গৃহিনীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তার সাথে কথা হলে ইসমাইল বলেন, আমি হরেক মাল ব্যবসা করে বাংলাদেশে প্রায় ৪২ জেলা ঘুরেছি। গ্রামগঞ্জে ওই সব পণ্যের ভালো চাহিদা থাকায় মাস শেষে যাবতীয় খরচ বাদে ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা আয় হয়।
তিনি আরো জানান, অনেক সময় দেখা যায় শরীর খারাপ কিংবা আকাশ খারাপ থাকলে এ কাজে বের হওয়া যায় না। ঘরে বসে অবসর সময় পার করতে হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওইসব মালামাল ক্রয় করে প্রতিদিন গ্রামেগঞ্জে বিক্রি করতে হয়। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত সাইকেল চালিয়ে এসব হরেক মাল বিক্রি করি। তিনি আরো বলেন, জামালপুরের ইসলামপুরে থাকার সুবাদে মাসে এক বার বাড়ি গিয়ে পরিবারর সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে সংসারের খরচের টাকা দিয়ে আসি। তার মতো অনেকেই এরকম হরেক মালের ব্যবসা করছেন।
বাহাদুরপুর গ্রামের গৃহিনী সাফিয়া আক্তার বলেন, আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ টাকার অভাবে বাজার থেকে কম দানে কসমেটিকস সামগ্রী কিনতে পারিন না। তাই হরেক মাল বিক্রেতার কাছ থেকে সব সময় ব্যান, চুড়ি, ক্লিপ, চিরুনি, ফিতা, স্টিলের বাটি, মগ ক্রয় করি। তাদের কাছ থেকে যে টাকায় ওইসব পণ্য কেনা যায় বাজার থেকে ক্রয় করলে তার দ্বিগুণ টাকা লাগে।
তানিয়া জানান, তার মেয়ে দুল, ব্যান, চুড়ি, ক্লিপ, কেনার জন্য বায়না করায় হরেক মাল বিক্রেতার কাছ ওইসব কিনে দিয়েছি। এখানে ওইসব মাল খুবই কম দামে পাওয়া যাওয়ায় আমাদের মতো নিম্ন আয়ের লোকজনরা ক্রয় করতে পারছে। হরেক মাল বিক্রেতার কাছ থেকে পণ্য কিনতে পেরে তারা খুবই খুশি।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ © নলডাঙ্গা বার্তা